১৮ মাসে ১৯৬ দেশ ভ্রমণ

ট্রাভেলগবিডি ডেস্ক

সৃষ্টিজগতের চমৎকার সব সৌন্দর্য দেখার ও গবেষণার আগ্রহ নিয়ে দেশ-দেশন্তর ঘুরে বেড়ায় মানুষ। ভ্রমন পিপাসু মন সময় পেলেই ছুটে যায় পাহার কিংবা সমুদ্রে। কিছুটা ব্যতিক্রম কিছু করতে কেউ আছেন সাইকেল চালিয়ে, কেউবা আবার বাইক নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষ করেন। এভাবে অনেকেই বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লিখিয়েছেন নিজের। তাতেও বিশ্বের সব দেশ ঘুরতে সময় লেগেছিল তিন বছর তিন মাস।

তবে এবার মাত্র ১৮ মাস ২৬ দিনে বিশ্ব ভ্রমণ শেষ করেছেন ২৭ বছর বয়সী মার্কিন নারী পর্যটক ক্যাসি ডি পেকল। হাইস্কুলে থাকতেই জীবনে বড় মাপের কিছু করার কথা ভাবেন ডি পেকোল। যখন পেকলের বয়স ২৫ বছর। তখন বাস্তবতা তাকে বিশ্বভ্রমণের পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করে। নিজের ছকবাঁধা জীবনযাপন নিয়ে একেবারেই খুশি ছিলেন না পেকল।

একঘেয়ে চাকরি, নিজের প্যাশনকে উপেক্ষা করার বিষয়গুলো উদ্বিগ্নতা তৈরি করে। তাই সময় যেন ক্যাসিকে পেছনে ফেলে না যায়, তাই তখনই এই সিদ্ধান্ত নেন। কোনো পার্থিব দৃষ্টিভঙ্গিই তার অসাধারণ ব্যক্তিগত লক্ষ্য থেকে হটাতে পারবে না। কিন্তু পরিব্রাজক শব্দটির সঙ্গে নারীমুখ স্পষ্ট করতে আজো বাঁধে বহু মানুষের। আর সেখান থেকেই উঠে আসে নানা কথা, উত্‍কণ্ঠা ও বৈষম্য।

ক্যাসিই প্রথম নারী , যে এতো কম সময়ে বিশ্বভ্রমণ করেছেন

উত্তর-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাটের নারী ক্যাসি ডি পেকোল। তিনি ভ্রমণ করেছেন বিশ্বের প্রতিটি দেশ। এছাড়া তিনিই প্রথম নারী, যার নাম বিশ্বের সব সার্বভৌম দেশ ঘুরে দেখার ক্ষেত্রেও শীর্ষস্থানে আছে। তার সারা বিশ্ব ভ্রমণে খরচ হয়েছে মাত্র ২ লাখ ডলার। ক্যাসি ডি পেকোল ২০১৫ সালের জুলাইয়ে বিশ্বভ্রমণে বের হন এবং চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্বের সব দেশ ঘোরা শেষ করেন। তার ভ্রমণ তালিকার ১৯৬তম ও সর্বশেষ দেশ হিসেবে ইয়েমেন যোগ হয়েছে।

 

পুরো বিশ্বভ্রমণে তার লেগেছে ১৮ মাস ২৬ দিন। এর আগের রেকর্ড যার, তার বিশ্বের সব দেশ ঘুরতে সময় লেগেছিল তিন বছর তিন মাস। ডি পেকোল গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃতি পেতে আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছেন। বিশ্বভ্রমণের সময় ডি পেকোল দেশগুলোর মেয়র ও পর্যটনমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন এবং এ সংস্থার শান্তি ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন। বিশ্ব পরিভ্রমণে ডি পেকোলকে ২৫৫টি ফ্লাইট ও পাঁচটি পাসপোর্ট ব্যবহার করতে হয়েছে।

প্রতিটি দেশেই তিনি দুই থেকে পাঁচদিন করে থেকেছেন

৫০টির বেশি দেশে তিনি বৃক্ষরোপণ করেছেন ও প্রতিটি দেশে তিনি অবস্থান করেছেন দুই থেকে পাঁচদিন। তার সারা বিশ্ব ভ্রমণে খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ডলার, যার কিছুটা তিনি নিজে জমিয়েছেন এবং অবশিষ্ট বড় একটা অংশ উঠে এসেছে ক্লিফ বার, ইগল ক্রিক ও বিশ্বের ইকো-হোটেলগুলোর মতো পৃষ্ঠপোষকের অনুদান থেকে। ডি পেকোল পুরো ভ্রমণের ভিডিওচিত্র ধারণ করে নিয়ে এসেছেন, আশা করছেন তা দিয়ে নিজের চমকপ্রদ ভ্রমণের একটি তথ্যচিত্র তৈরি করার।

কলেজে প্রধানত পরিবেশ বিষয়ে পড়ালেখা করেছেন ক্যাসি। তিনি সবসময় উপলব্ধি করতেন বড় এবং মহৎ কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া বিশ্ব ভ্রমণ করা ঠিক নয়। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে তিনি ভ্রমণ শুরু করেন। পর্যটনের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি স্থাপন করা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক একটি সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পিস থ্রু টুরিজম’ (আইআইপিটি) শুভেচ্ছাদূত হয়ে তিনি টেকসই পর্যটনের জন্য প্রচারণা চালান।

অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৬ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। একই বছরকে জাতিসংঘ প্রথমবারের মত ইয়ার অব পিস বা শান্তির বছর ঘোষণা করে। পূর্ব এবং পশ্চিমের দেশগুলোর মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উত্তরোত্তর বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরস্পরের সাংস্কৃতিকে বুঝার জন্য ১৯৮৬ সালকে ইয়ার অব পিস ঘোষণা দেয়া হয়।

ক্যাসি তার ভ্রমণের ভিডিও ধারণ করেছেন, যা দিয়ে তিনি তথ্যচিত্র বানাতে চান

ক্যাসি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া দেশ উত্তর কোরিয়ায়ও ভ্রমণ করেন। তিনি বেইজিংভিত্তিক একটি চীনা পর্যটক গ্রুপের সঙ্গে মাত্র তিন দিনের জন্য দেশটি সফর করেন। তিনি সেখানকার নিরাপত্তা রক্ষীকে নিজের মিশন সম্পর্কে অবগত করেন। তিনি তাকে বুঝাতে চেষ্টা করেন যে যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার সরকারের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না থাকলেও তাদের ব্যক্তিগতভাবে দুজনের পরস্পরের শত্রু হওয়া উচিত নয়। ২৭ বছর বয়সী ক্যাসি  শুধুমাত্র দেখাতে চেয়েছেন আমরা সবাই বন্ধু হতে পারি এবং সহাবস্থান করতে পারি।

 

 

 

সূত্র- ডেইলি বাংলাদেশ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন
Please log in to share your opinion

Related Posts

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন