যুদ্ধের পর অক্ষত থাকবে ইউক্রেনের দর্শনীয় স্থানগুলো?

 

 

যুদ্ধের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, এ কথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় যে, যুদ্ধ মাত্রই ধ্বংসের ইঙ্গিত। রাজনৈতিক সঙ্ঘাতকে কেন্দ্র করে সম্মুখসমরে অবতীর্ণ হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। কিন্তু যুদ্ধের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, এ কথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় যে, যুদ্ধ মাত্রই ধ্বংসের ইঙ্গিত। ইউক্রেনে রয়েছে এমন কিছু দর্শনীয় স্থান যা বহু মানুষের চোখেই ছবির মতো সুন্দর। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ধ্বংসলীলার মুখোমুখি হতে পারে এই স্থানগুলি।

কিয়েভ 
কিয়েভ ইউক্রেনের রাজধানী। এটি উত্তর-মধ্য ইউক্রেনে অবস্থিত। আকর্ষণীয় সোভিয়েত স্থাপত্য, সোনার গম্বুজযুক্ত গির্জা এবং সুদর্শন রাস্তায় পরিপূর্ণ কিয়েভ অসাধারণ বৈচিত্রের সম্ভার। ৪৮২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গড়ে ওঠা কিয়েভ পূর্ব ইউরোপের প্রাচীনতম শহরগুলির মধ্যে একটি। রাশিয়া এবং জার্মানি বিভিন্ন সময়ে এই শহর দখল করলেও, এটি এখন স্বতন্ত্র ভাবে ইউক্রেনীয়। প্রাচীন পূর্ব স্লাভিক সভ্যতা এবং ইউক্রেনীয় জাতিসত্তার বিকাশে কিয়েভের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এখানকার লোকস্থাপত্য এবং নৃতাত্ত্বিক জাদুঘরটি ইউরোপের বৃহত্তম ওপেন এয়ার জাদুঘরগুলির মধ্যে অন্যতম। এ ছাড়াও রয়েছে পেচেরস্ক লাভরা, যা ইউক্রেনের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধার্মিক স্থানগুলির মধ্যে একটি। তবে কিয়েভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ হল আন্দ্রিয়িভস্কির উতরাই পথ। এই খাড়া পাথরযুক্ত পথের দুই ধারে রয়েছে আর্ট-নুভো শৈলীতে নির্মিত সারি সারি বাড়ি, আর সঙ্গে রয়েছে ছোট ছোট অসংখ্য মূর্তি।

কিভ।

কিয়েভ লুভিউ

পঞ্চম শতাব্দীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে পরিপূর্ণ এই শহরে রয়েছে বহু স্মৃতিস্তম্ভ, জাদুঘর এবং বহু প্রাচীন ভবন। ইউক্রেনের সাংস্কৃতিক পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত এই শহরে রয়েছে ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারি, অপেরা এবং ব্যালে দেখার সুযোগ।

 

লুভিউ।

লুভিউ ওডেসা

সমুদ্র তীরবর্তী এই শহরকে বলা হয় ‘পার্ল অব দ্য ব্ল্যাক সি’। ঐতিহাসিক ভাবে গ্রিক, অটোমান ও রুশ, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা এই শহর নুভো স্থাপত্যের অন্যতম পীঠস্থান। পাশাপাশি এখানে রয়েছে অসাধারণ সব সমুদ্র সৈকত। তবে এই শহরের মূল আকর্ষণ হল কয়েক হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ভূগর্ভস্থ সমাধিক্ষেত্র। এ যেন শহরের তলায় লুকিয়ে থাকা আর একটি শহর। 

ওডেসা।

ওডেসা চেরনোবিল

পারমাণবিক দুর্ঘটনার জন্য এই শহরের পরিচিতি বিশ্বজুড়ে। কয়েক দশক ধরে যেন শোক সন্তপ্ত এক ইতিহাসের স্মৃতি নিয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে চেরনোবিল। কারও কারও মতে সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের সূচনা হয়েছিল এই শহর থেকেই। এখনও এই শহরের বহু অংশ মুক্ত হতে পারেনি তেজস্ক্রিয়তা থেকে। সেই সব স্থানে আজও নিষিদ্ধ মানুষের যাতায়াত।

 

চেরনোবিল।

চেরনোবিল

 

কামিনেতস পদিলস্কি


কামিনেতস পদিলস্কি বিখ্যাত এখানকার কেল্লার জন্য। দেখে মনে হবে দুর্গটি যেন রূপকথার পাতা থেকে উঠে আসা। শুধু দুর্গই নয়, এখানকার শহরতলি দেখলেও মনে হবে সময় যেন থমকে আছে এখানে। বেলুনে চেপে এই গিরিখাত পরিবেষ্টিত শহরটিকে দেখার অভিজ্ঞতা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন।

 

কামিনেতস পদিলস্কি।

কামিনেতস পদিলস্কি

যুদ্ধ শেষে এই সব অসামান্য স্থানগুলির কতটুকু অবশিষ্ট থাকবে তা বলা সহজ নয়। তবে ইউক্রেন বার বার নানা যুদ্ধের আঘাত সহ্য করেও টিকে গিয়েছে। তাই আশা করা যেতে পারে যে, এই যুদ্ধের পরেও টিকে থাকবে ইউক্রেনের এই সব দর্শনীয় স্থানগুলি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন
Please log in to share your opinion

Related Posts

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন