দিবাকর
লেখার শিরোনাম দেখে অনেকেই ভ্রু কুচকে তাকাতে পারেন। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন— পৃথিবীর চোখ! এটা আবার কি? পৃথিবীর আবার চোখ হলো কবে? মাটি, বালি, পাথরসহ নানা উপাদানের আস্তরে ঢাকা একটি গ্রহ পৃথিবী। তার চোখ থাকার তো প্রশ্নই ওঠেনা!
তবে কল্পনাবিলাসী মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানকে নানা কাল্পনিক বস্তু বা বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে। ‘আই অব দি আর্থ’ বা ‘পৃথিবীর চোখ’ এমনই জায়গা। বিশ্বের বেশ কিছু জায়গাকে পৃথিবীর চোখ নামে অভিহিত করা হয়। এসব জায়গার আকৃতি অনেকটা মানুষের চোখের মতো। বিখ্যাত কয়েকটির বর্ণনা থাকছে এই লেখায়।
সেটেনাএটি একটি প্রাকৃতিক জলাশয়। অবস্থান দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ ক্রোশিয়ার অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে। ওপর থেকে দেখলে নীল জলের এই জলাশয়টিকে চোখের মত দেখায়। তাই এটিকে ‘আই অব আর্থ’ বা ‘পৃথিবীর চোখ’ বলা হয়। ৪৯০ ফুট গভীরতার প্রাকৃতিক এই জলাশয়টি ক্রোশিয়ার দক্ষিণ প্রান্তে বয়ে যাওয়া সেটেনা নদীর উৎস।
কেরিথকেরিথ বা কেরিড যে নামেই ডাকা হোক নাহ কেন, লাল ভলকানিক পাথর দ্বারা সৃষ্ট প্রায় ৩ হাজার বছরের পুরোনো একটি লেক এটি। আইসল্যান্ডের ওয়েস্টার্ন ভলকানিক জোনে অবস্থিত এই লেকটিকে বলা হয় পৃথিবীর চোখ। ধারণা করা হয়, তিন হাজার বছর পূর্বে বিশাল অগ্নুৎপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসের ফলেই চোখ আকৃতির এই লেকের সৃষ্টি।
আই অব সাহারাঅবস্থান পূর্ব আফ্রিকার দেশ মৌরিতানিয়ার নিকটবর্তী অঞ্চলে। সাহারা মরুভূমির ভেতর অবস্থিত বলেই একে ‘আই অব সাহারা’ বা ‘সাহারার চোখ’ও বলা হয়। ভূতত্ত্ববিদরা ধারণা করেন, প্রায় ৬০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে তাপে মরুভূমির পাথর গলে এটি সৃষ্টি হয়েছে। আকৃতির দিক দিয়ে এটি সবচেয়ে বড় ‘পৃথিবীর চোখ’। এর ব্যাসার্ধ ৪০ কিলোমিটার। ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচু দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমান থেকে এটি দেখা যায়। ভূমিতে দাঁড়িয়ে ‘আই অব সাহারা’ দেখা সম্ভব নয়।
আই অব মালদ্বীপমালদ্বীপের রাজধানী মালের উত্তরে এর অবস্থান। এটি মূলত একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ। দ্বীপের মাঝখানে একটি স্বচ্ছ পানির জলাশয়কে ওপর থেকে দেখলে অবিকল একটি নীল চোখের মতো মনে হয়। তাই একে ‘পৃথিবীর চোখ’ বা ‘মালদ্বীপের চোখ’ও বলা হয়।