দেশের সেরা ১০ দর্শনীয় স্থান

দেবাশীষ By দেবাশীষ - 03 January, 2022

ষড় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দযের লীলাভূমি। এদেশে প্রকৃতির দান পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র-সৈকত, নদী, ঝরনা যেমন রয়েছে তেমনি মানুষের তৈরি প্রাচীন নিদর্শন, অধুনা পার্ক, অবকাশ কেন্দ্রও রয়েছে। এসব স্থানে প্রতি বছরই বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। বছর শেষে পর্যটনের হালচাল নিয়ে জরিপের ফল প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এই জরিপে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি দেশের শীর্ষ দর্শনীয় স্থানগুলো তুলে ধরা হয়েছে। জেনে নিন দেশের প্রথম ১০টি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানের কথা-

কক্সবাজার

কক্সবাজার নিয়ে নানান সময়ে ট্যুরিস্টদের অভিযোগ থাকলেও দেশীয় ট্যুরিস্টদের বড় অংশের ভ্রমণ চাহিদা মেটায় কক্সবাজার। উৎসব কিংবা অবসর পেলেই বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণপ্রেমী মানুষেরা ছুটে যায়। কক্সবাজার ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস।  

সেন্টমার্টিন

বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমণপ্রেমী মানুষের কাছে প্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে টেকনাফ থেকে জাহাজ চালু হওয়ার পর নারিকেল জিঞ্জিরা খ্যাত দ্বীপটিতে পর্যটন ফুলে ফেঁপে উঠেছে। গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল-রিসোর্ট। সেন্টমার্টিন ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হচ্ছে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি। 

কুয়াকাটা

সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালির কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। সারা দেশ বিশেষ করে দক্ষিণ বঙ্গের মানুষের কাছে কুয়াকাটা ভ্রমণের অন্যতম গন্তব্য।  

সুন্দরবন

বাংলাদেশের দক্ষিণের সাগরতট ঘেষা জেলা খুলনা, সাতক্ষীর ও বাগের হাট জেলায় বিস্তৃত। বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা আনা গোনা কম নয়। বিশেষ করে শীত মৌসুমে সুন্দরবনেরর হাজার হাজার গাছ-গাছালির সৌন্দর্য ও রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ দেখতে পর্যটকেরা ছুটে যায়।

সাজেক

সাজেক উপত্যকা বা সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। রাঙামাটি জেলার মিজোরাম সীমান্তের সাজেক ভ্যালি মূলত পাহাড়ী জনপদ। ভূমি থেকে প্রায় আঠারো শত ফুট ওপরের এই পাহাড়ি জনপদে দাড়িয়ে মেঘের দারুণ আনাগোনা দেখা যায়। সাজেকে থাকার জন্য রয়েছে অনেকগুলো রিসোর্ট। সারা বছর সাজেক ভ্রমণে যাওয়া গেলেও সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাস। 

সিলেট

চা বাগানের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে প্রথমেই আসে সিলেটের নাম। সবুজ চা-বাগানের পাশাপাশি সিলেটে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান আছে। ভোলাগঞ্জ, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, সাদাপথর, জাফলং প্রতি বছরে প্রচুর পর্যটক আসে। 

বান্দরবান

দেশের যেসব জেলায় সারা বছরপর্যটকরা বেশি ভিড় করেন এদের মধ্যে বান্দরবান অন্যতম। তবে বান্দরবানে মূলত যারা রোমাঞ্চকর ভ্রমণ পছন্দ করেন তাদের কাছে প্রিয়। উঁচু পাহাড়ে উঠে চারপাশের দৃশ্য উপভোগ করা কিংবা মেঘ হাতে নিয়ে খেলা করার দৃশ্য আপনি শুধু বান্দরবানে গেলেই দেখতে পাবেন। বান্দরবানের নীলাচল থেকে নীলগিরি, কেওক্রাডাং-বগালেক, আমিয়াখুম-নাফাখুম ইত্যাদিসহ আছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান।।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের উদ্যোগে ১৯৭৫ সালে এ জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের লোকশিল্পের সংরক্ষণ, বিকাশ ও সর্বসাধারণের মধ্যে লোকশিল্পের গৌরবময় দিক তুলে ধরার জন্যই এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে সংরক্ষিত আছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের হাতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী প্রায় ৫ হাজার নিদর্শন।

রাঙামাটি

কাপ্তাই হ্রদ, ঝুলন্ত সেতু, রাজবন বিহার, ফুরেমন পাহাড়সহ রাঙামাটি জেলা সদরের বিভিন্ন পর্যটনস্থানে বছরজুড়েই পর্যটকেরা ভ্রমণ করেন।

জাতীয় চিড়িয়াখানা, ঢাকা

ঢাকার ‍মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানায় বছরজুড়েই দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। ১৮৬ একরের এই চিড়িয়াখানায় শতাধিক প্রজাতির প্রায় ৩ হাজার পশুপাখি আছে। বিবিএসের জরিপ থেকে জানা যায় প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজারের মতো দর্শনার্থী এখানে ঘুরতে আসেন। 

উপরের স্থানগুলো ছাড়াও সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দর্শনীয় স্থানগুলোতে সারা বছর দর্শনার্থীদের ভীড় লেগে থাকে। স্থানগুলোর মধ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ, কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার, ঢাকার লালবাগ কেল্লা, দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির,মেহেরপুরের মুজিবনগর, বগুড়ার মহাস্থানগড়, নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার,বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন
Please log in to share your opinion

Related Posts

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন