সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে ব্রিটিশ আমল থেকে দায়িত্ব পালন করছে চালক, গার্ড ও টিকিট চেকারা। এজন্য তাদের বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয়। প্রতি ১০০ মাইল ট্রেন চালালে দেওয়া হয় মূল বেতনের এক দিনের সমপরিমাণ অতিরিক্ত টাকা। পেনশনের সাথেও দেয়া হয় বাড়ি ৭৫ শতাংশ টাকা। ১০০ বছর ধরে এভাবেই বেতন পেয়ে আসছেন ট্রেনের রানিং স্টাফরা।
সম্প্রতি রেলের রানিং স্টাফদের অতিরিক্ত এসব সুযোগ সুবিধা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আর এতে ক্ষুব্ধ রানিং স্টাফরা ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলেন, আমাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই। আমরা দিন রাত ২৪ ঘণ্টা সারাবছর কাজ করি। সেই হিসেবে প্রতি এক মাসে আমাদের ডিউটি দাঁড়ায় আড়াই থেকে তিন মাসের সমপরিমাণ। সে অনুযায়ী বেতনও পেয়ে আসছি আমরা। কিন্ত রাষ্ট্রের বেসামরিক কর্মচারীদের অতিরিক্ত ভাতা পাওয়ার সুযোগ নেই মর্মে, অর্থ-মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বলা হয়েছে, রানিং স্টাফরা যতই ডিউটি করুক শুধুমাত্র এক মাসের সমপরিমাণ অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হবে। বাতিল করা হয়েছে তাদের অবসরকালীন ভাতার বাড়তি ৭৫ শতাংশ টাকাও।এতে ক্ষুদ্ধ হয়েছে রেলের রানিং স্টাফরা। তারা বলেন, দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে ৮ ঘণ্টার বেতন নেব কেন? তাহলে আমরাও ৮ ঘণ্টা বেশি ডিউটি করব না? যেখানে ৮ ঘণ্টা শেষ হবে সেখানেই গাড়ি বন্ধ করে দেব। এই টাকা আমাদের প্রাপ্য। রেলের শ্রমিক নেতারা বলছেন সমস্যার সমাধান না হলে ২৬ ডিসেম্বর থেকে কর্ম বিরতিতে যাবেন তারা।এতে ট্রেন চলাচল বন্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তবে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। নুরুল ইসলাম সুজন বলছেন, অর্থ-মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে দ্রুতই মিলবে সমাধান। মন্ত্রী বলেন, এটা যাতে দ্রুত সমাধান হয় সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সমাধান যাই আসুক, সবাই জানতে পারবে। সারাদেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্রেন চালক দরকার হলেও আছে মাত্র এক হাজার।