ঘরে বসেই হোটেল বুকিং

ট্রাভেলগবিডি ডেস্ক

একসময় হোটেল বুক করার জন্য চিঠি লেখাই ছিল চল। টেলিফোন এলে ব্যাপারটা অনেকখানি সহজ হয়েছিল বটে, তবু সেটা অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার মতো। ভাড়া অনুযায়ী হোটেল কেমন, কক্ষ কেমন, খুঁটিনাটি সুযোগ-সুবিধা জানার সুযোগ ছিল কম। ইন্টারনেট এসে হোটেল বুকিং ব্যবস্থা আমুল বদলে গেছে। অনলাইনে হোটেল কক্ষ বুক করার সবচেয়ে বড় সুবিধা সম্ভবত সেগুলোর কোনো বাঁধা ধরা কর্মঘণ্টা নেই। ভিনদেশের সময়সূচির হেরফেরের দুশ্চিন্তা নেই। সকাল-বিকেল-মধ্যরাত নেই।  গ্রাহকের সুবিধামতো সময়ে বুক করলেই হলো। এতে অবশ্য হোটেল মালিকদেরও সুবিধা। কারণ গবেষণা বলছে, এতে হোটেল বুকিংয়ের হারও বেড়েছে।

কিভাবে হোটেল বুক করতে হয়: 

আজকাল মোটামুটি সব হোটেলের ওয়েবসাইট থেকে আগাম কক্ষ বুক করা যায়। কাজটা হয় বিশেষায়িত সফটওয়্যারের মাধ্যমে। কোন কোন কক্ষ ফাঁকা আছে, এগুলোতে বিশেষ সুবিধা কি আছে, কিংবা কবে থেকে ফাঁকা হবে, তা হোটেল কর্তৃপক্ষের পক্ষে কেউ একজন সফটওয়্যারে ইনপুট দেন। সে সফটওয়্যারের সঙ্গে ওয়েবসাইট যুক্ত থাকে। ফলে ভ্রমণে ইচ্ছুক কেউ যখন ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারেন তখন সহজেই নির্দিষ্ট তারিখে ফাঁকা কক্ষগুলোর একটা তালিকা পান। ছবি দেখে, ভাড়া অনুযায়ী সুবিধা বুঝে বুক করলেই হয়ে গেল। এখন তো ওয়েবসাইটেই আগাম মূল্য পরিশোধ করা যায়। আবার হোটেলে গিয়েও সে ব্যবস্থা থাকে। অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা অনেকটা এজেন্সি হিসেবে কাজ করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এক্সপিডিয়া, বুকিং ডটকম, অ্যাগোডা কিংবা বাংলাদেশে আমার রুম ডটকম, ভ্রমণডটকম, ঘুরব ডটকম, টিকিট শালা ডটকম। এই ওয়েবসাইটগুলাতে দিনক্ষণের হিসাব ও কক্ষের ধরনের পাশাপাশি আপনি যে এলাকায় যেতে চান সেটা উল্লেখ করে দিতে হয়। ওই এলাকায় ওই সময়ে কোন কোন হোটেলের কোন কোন কক্ষ ফাঁকা আছে তা দেখাবে।

অনলাইনে হোটেল বুক করার সুবিধা: 

হোটেল বুকিং ওয়েবসাইটের অনেকগুলো সুবিধার একটি হলো, অচেনা জায়গায় প্রতিটি হোটেলের নাম আলাদা কওে জেনে নেয়ার প্রয়োজন নেই। এক ওয়েবসাইটেই আপনি সবকটি হোটেলের তালিকা পেয়ে যাবেন। হোটেল কেমন, তা ছবি দেখে তো জানতে পারবেনই, পাশাপাশি আগে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের লেখা পর্যালোচনা (রিভিউ ও রেটিং) দেখেও হোটেলের মান সম্পর্কে ধারণা পাবেন। এ ধরনের ওয়েবসাইটগুলো রেটিং বা দামের ক্রম অনুযায়ী হোটেলের তালিকা দেখার সুযোগ আছে। ফলে যেমন মান ও দাম চান তেমনই পাবার সুযোগ থাকে। সবচেয়ে বড় কথা, সবকটি হোটেলের তালিকা একসঙ্গে দেখা যায় বলে হোটেলগুলোর মধ্যেও একটি প্রতিযোগিতা চলে। এতে মূল্য ছাড় পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যায়। অনেক ওয়েবসাইটে প্যাকেজ ট্যুরের সুবিধাও আছে। সেগুলোও দেখা যেতে পারে। হোটেলে বুকিংয়ের ওয়েবসাইট বিদেশ ভ্রমণের বেলায় বুকিং ডটকম ( www.booking.com ), এক্সপিডিয়া ( www.expedia.com ), ট্রিপ অ্যাডভাইজার ( www.tripadviser.com ), অ্যাগোডা ( www.agoda.com ) , হোটেলসডটকম ( www.hotels.com ) কিংবা ট্রিভাগোর ( www.trivago.com ) মতো ওয়েবসাইটগুলো দেখতে পারেন। অবশ্য আজকাল অনেকে গুগলকেও এই তালিকায় রাখতে চান। কারণ গুগলের ভ্রমণ সংক্রান্ত খোঁজখবরের বেলায় সরাসরি হোটেল বুক করার অপশন দেখায়।

‘বিদেশ ভ্রমণের বেলায়’ কথাটি লেখা কিছুটা ভুল। কারণ, এই ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে দেশীয় হোটেল বুক করার সুবিধাও আছে। আবার আমাদের দেশি অনেক ওয়েবসাইট বিদেশি হোটেলগুলো নিয়েও কাজ করে। হোটেল বুকিং ব্যবস্থাটাই মোটামুটি বৈশ্বিক বলা চলে। তবু দেশীয় হোটেলগুলোর খোঁজ খবর যে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ভালো পাওয়া যাবে, সেটাই স্বাভাবিক। আমার রুমডটকম ( www.amarroom.com ) যেমন শুধু বাংলাদেশি হোটেলগুলো নিয়েই কাজ করে এমনটি নয় তারা একই সঙ্গে বিমান টিকিট কাটার সুবিধাও দিয়ে থাকে। তাছাড়া বর্তমানে দুনিয়ার সর্বত্রই অবস্থিত হোটেলগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। যে সকল ওয়েবসাইট সার্চ করে আপনি নিজেই পছন্দসই হোটেল বেছে নিতে পারেন। সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় ভ্রমণ পাগল মানুষ এখন ভরসা রাখছেন দেশি-বিদেশি এসব ওয়েবসাইটে। ভ্রমণ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগেই নিজের হোটেল বা রিসোর্ট কক্ষটি নিশ্চিত করে যাচ্ছেন। আর যুৎসই থাকার একটি জায়গা নিশ্চিত করতে পারলে ভ্রমণের আনন্দ এক লাফে বেড়ে যাচ্ছে বহুগুণ।

 

Source-Prothom alo

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন
Please log in to share your opinion

Related Posts

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন