অশান্তিতে প্রশান্তি পার্ক

নুরুল করিম

ভোরবেলায় চারদিকের অন্ধকারাচ্ছন্ন মুখরতা। আলস্যের চাদর মুক্ত করে কুয়াশার ধূম্রজাল দেখতে ঠিক সাড়ে পাঁচটায় ঘুম ভাঙলো আমাদের। আকাশচুম্বী পাহাড়ের গায়ে কুয়াশা যেমন ঝুলে থাকে, ঠিক তেমনি আমাদের ছনের ঘরটিও অন্যের দৃষ্টি সীমার আড়ালে। ভালোই লাগছিল, কুয়াশায় ভিড়ে নদীর বুকে দু-একটা নৌকার বিচরণ। কর্ণফুলীর পাড়ে আর কেউ নেই; আমরা ক’জন। সঙ্গে নিস্তব্ধতা, হিম বাতাস। এ বুঝি ছোট্ট জীবনের সেরা সকালগুলোর একটি। যখন আরেকটু বেলা হলো, কোমল সূর্যরশ্মিতে ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দুগুলো মুক্তোদানার মতো ঝলমল করছিল। গাছের পাতা থেকে শিশির ঝরে পড়ার টুপটাপ শব্দ আর পাখিদের কলরব আন্দোলিত পুরো ক্যাম্প। কী স্নিগ্ধময় বসন্তের সকাল! 

 নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য উপযোগী স্থান এটি

কাপ্তাই- চট্টগ্রাম সড়কের কোল ঘেঁষে নির্মিত হয়েছে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র প্রশান্তি পার্ক। পাহাড়, সবুজ বৃক্ষ ও কর্ণফুলী নদীসহ বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় স্পট নিয়ে ভ্রমণ পিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে পর্যটনকেন্দ্রটি। ঘোরাঘুরি, আড্ডা, পিকনিক ও প্রিয়জনদের নিয়ে নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য উপযোগী স্থান এটি। কাপ্তাইয়ের স্বচ্ছ জলে রোমাঞ্চকর কায়াকিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে বাকি সময় মাচা, কুঁড়েঘর, দোলনা ও বাগানে ঘোরাঘুরি করে নিমিষেই কাটিয়ে দেয়া যায়। বিনোদনকেন্দ্রটিতে রয়েছে ফ্যামিলি কটেজ, জুম ঘর, কাপল ও ব্যাচেলর রুম। রয়েছে রাতে ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থাও। পার্কটা কর্ণফুলী নদীর পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় এর আশপাশের সৌন্দর্য আপনাকে মোহিত করবে। যারা রাতে তাঁবুতে থাকবেন, তারাই খোঁজ পাবেন আসল সৌন্দর্যের। প্রকৃতি অপার্থিব এক সৌন্দর্যের জাল বুনে সারারাত ধরে।

 রাতে তাঁবুতে থাকবেন, তারাই খোঁজ পাবেন আসল সৌন্দার্য

কুয়াশাজড়ানো মায়াময় অনাবিল সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে চারিদিকে। ভোরে স্বচ্ছ সবুজাভ জলে কুয়াশচ্ছন্ন পরিবেশ; সেই সঙ্গে আকাশে সোনালি আভা ছড়িয়ে সূর্যমামার কিরণে ঝলমলিয়ে উঠে ধরণী। সবকিছু মিলিয়ে অবর্ণনীয় এক সৌন্দর্যের মুখোমুখি হবেন প্রশান্তি পার্কে, যার খুব ক্ষীণ অংশই বর্ণনা করা যায়। চুপচাপ বসে জীবনের অন্যতম স্বরণীয় সকাল উপভোগ সম্ভব প্রশান্তি পার্কেই।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন
Please log in to share your opinion

Related Posts

আমাদের সাবস্ক্রাইব করুন